সাইফুর নিশাদ | নরসিংদী: নরসিংদীতে একাধিক মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করতে এক বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল। এর মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করে ফেরার সময় হামলার শিকার হয় তারা।
ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন নরসিংদী মডেল থানার ১১ সদস্যের পুলিশের দলের চারজন আহত।আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন নরসিংদী মডেল থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) এরশাদ উল্ল্যাহ, উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান, রবিউল আওয়াল এবং সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাহ আলম।
আহত পুলিশ সদস্যদের নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকার একটি বাড়িতে পুলিশের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী মডেল থানা থেকে বলা হয়েছে, পুলিশের দলটির ওপর হামলা চালিয়েছেন গ্রেপ্তার আসামির পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার দুপুরে নরসিংদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
মামলায় আসামি হিসেবে যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা হলেন—ফরহাদ মিয়া, ফয়সাল মিয়া, সুজন মিয়া, নুরুন নাহার বেগম, সুমাইয়া আক্তার, ইমন প্রধান, লাকি আক্তার, মো. টুটুল, শরীফ মিয়া, শুক্কুর আলী, হাতেম আলী, মজনু খন্দকার। তাঁদের সবাই এক পরিবারের সদস্য এবং সবার বাড়ি সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকার পুরান পাড়ায়।
পুলিশ বলছে, মাদক ও পুলিশের ওপর হামলাসহ একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি ফরহাদ মিয়া, সুজন মিয়া, ফয়সাল মিয়া ও মজনু খন্দকারকে গ্রেপ্তারের জন্য নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকার পুরান পাড়ায় অভিযান চালানো হয়। গতকাল রাত দেড়টার দিকে চালানো ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন নরসিংদী মডেল থানার পরিদর্শক এরশাদ উল্ল্যাহ।
এ সময় আসামিদের মধ্যে সুজন ও ফয়সাল মিয়া পালিয়ে যান। তবে ফরহাদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে নিয়ে ফেরার সময় পুলিশের ওই দলের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এতে এরশাদ উল্ল্যাহসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে গ্রেপ্তার ফরহাদকে সঙ্গে নিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে থানায় চলে আসে পুলিশের দলটি।
হামলার শিকার নরসিংদী মডেল থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) এরশাদ আলী বলেন, ‘আসামি ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে ফেরার সময় তাঁর পরিবারের সদস্যরা ডাকাত ডাকাত বলে হট্টগোল শুরু করেন এবং আমাদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়ে হামলা চালান। আমাদের পরিচয়পত্র ও আদালতের ওয়ারেন্ট দেখিয়েও কাজ হয়নি। এতে আমি ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছি। আমি ছাড়াও অভিযানে থাকা পুলিশের আরও তিন কর্মকর্তা একইভাবে আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় নাম উল্লেখ করা ১৩ আসামির মধ্যে ১০ জনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। ওই পরিবারের সদস্যরা ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর জেলা গোয়েন্দা শাখার ১৮ সদস্যকে মারধর করে হাতকড়া পরিহিত তিন আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বলে জানান ওসি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।